যে সব কারনে ঈদ এ মীলাদুন্নাবী পালন করা যাবে না




আলহামদুলিল্লাহ।ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসুলিল্লাহ।আম্মাবাদ।

১.দিন নিয়ে বিভ্রান্তিঃ
মূলত যেদিন ঈদ এ মীলাদুন্নাবী পালন করা হয় (১২ রবিউল আউয়াল),সে দিন আসলেই রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্মদিবস কিনা সে ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে। রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্মদিবস যে ৯ রবিউল আউয়াল-এটি গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যুগের প্রখ্যাত আলেম মুহাম্মাদ সুলাইমান আল মানসূর ও মিশরের প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাহমূদ পাশা।সকলের কাছে সমাদৃত রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবন এর উপর লিখিত কিতাব-“আর রাহিক আল মাখতুম” এ রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্মদিবস ৯ রবিউল আউয়াল-২০ এপ্রিল উল্লেখিত হয়েছে।

২.কুরআন ও সহিহ সুন্নাহ হতে প্রমাণিত নয়ঃ
ইসলাম পরিপূর্ণ ধর্ম।কুরআন ও হাদিসের কোথাও ঈদে-মিলাদ পালন করতে বলা হয়নি। রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবায়ে কেরাম বা তাবেঈনগন কখনো এটা পালন করেননি।তাই এটা বেদআত ও গোমরাহী। 
রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
عن عائشة رضي الله عنها قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد- أخرجه البخاري ومسلم
আমাদের এ ধর্মে যে নতুন কোন বিষয় চালু করবে টা প্রত্যাখ্যাত হবে
(বুখারি ও মুসলিম)

রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ
إياكم ومحدثات الأمور، فإن كل محدثة بدعة وكل بدعة ضلالة  -رواه أبو داود و الترمذي وابن ماجه عن عرباض بن سارية.
সাবধান!ধর্মে প্রবর্তিত নতুন বিষয় থেকে সর্বদা দূরে থাকবে।কেননা নব-প্রবর্তিত প্রতিটি বিষয় হল বেদআত ও প্রতিটি বেদআত হল পথভ্রষ্টতা।
(আবু দাউদ,তিরমিজী,ইবনে মাজা,মুসনাদে আহমাদ)

৩.অমুসলিমদের অনুসরণঃ
ঈদে মীলাদুন্নাবী হল খৃষ্টানদের বড় দিন,হিন্দুদের জন্মাষ্টমী ও বৌদ্ধদের বৌদ্ধ-পূর্ণিমার অনুকরণ।ধর্মীয় বিষয়ে তাদের আচার অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করা আমাদের ঈমানের দাবীঅথচ ঈদে মীলাদুন্নাবী তাদের অনুসরণে কৃত একটি নতুন বেদআত

                                                    
৪.মৃত্যুর দিনে উল্লাস করাঃ
সর্বসম্মতিক্রমে ১২ ই রবিউল আউয়াল রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইন্তেকালের দিন।এ দিনে সাহাবায়ে কেরামগন শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন।আফসোসের বিষয় এই দিনে আজকের মুসলিমরা বুঝে-না বুঝে উল্লাস করছে।

৫. ইসলামে ঈদ দুইটিঃ
আল্লাহ ও তার রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক নির্ধারিত ইসলামে ঈদ হল দুইটি।ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা।এর সাথে ঈদ-এ-মীলাদুন্নাবী(মিলাদ-জন্মদিন) পালন করা ও একে সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ হিসেবে পালন করা ইসলামে নতুন সংযোজন তথা বিদআত।

عن أنس بن مالك رضي الله عنهما قال : قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم المدينة، ولهم يومان يلعبون فيهما، قال: ما هذان اليومان؟ قالوا كنا نلعب فيهما في الجاهلية، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : قد أبدلكم الله خيراً منهما: يوم الأضحى ويوم الفطر - رواه أبو داود
আনাস বিন মালিক(রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
যখন রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদিনায় আসলেন তখন দেখলেন বছরের দুটি দিনে মদিনাবাসীরা আনন্দ-ফুর্তি করছে।তিনি জিজ্ঞেস করলেন,এ দিন দুটি কি?তারা বলল যে আমরা ইসলামপূর্ব মূর্খতার যুগে এ দুদিন আনন্দ ফুর্তি করতাম। রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,আল্লাহ তা’আলা এ দু দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটো দিন তোমাদের দিয়েছেন।তা হল ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা।(আবু দাউদ)

রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যথার্থ অনুসরণ হল তাকে ভালবাসার প্রমাণ।

আমি রাসুলকে এ জন্যই পাঠিয়েছি যে,আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে তার আনুগত্য করা হবে” (নিসা-৬৪)

তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলকে অনুসরণ কর ও তোমাদের আমল বিনষ্ট কর না।”(মুহাম্মাদ-৩৩)

তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না।
(সুরা আরাফ-৩)

আল্লাহ তুমি আমাদের সকলকে রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যথার্থ অনুসরণ করার তওফিক দান কর।আমিন।
কৃতজ্ঞতাঃislamhouse