কসম বা শপথ ভংগ করলে কাফফারার বিধান



আল্লাহর নামে কোনো কসম বা শপথ ভংগ করলে কাফফারার কিভাবে দিতে হবে?

কসম করার বিধানের মধ্যে রয়েছে -
প্রথমত, আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করা বা কসম করা শিরক ও কুফর। তাই কখনো শপথ করলে একমাত্র আল্লাহর নামেই করতে হবে। নিজের মাথা, বুকে বা শরীর ছুঁয়ে, সন্তানদের কসম করে, বিদ্যা, মাটির নামে বা এইগুলো ছুঁয়ে কসম করা – এইসবগুলো কাজ সম্পূর্ণ হারাম।
দ্বিতীয়ত, কসম করলে অবশ্যই জায়েজ কোনো কাজের জন্য করতে হবে। হারাম কোনো কাজের জন্য কসম করা জায়েজ নয়, আর করলেও সেই কসম রক্ষা করা যাবেনা। বরং হারাম কসম ভংগ করতে হবে।
এখন কেউ যদি কোনো কসম করেন এবং সেটা ভেঙ্গে ফেলেন এর পরিবর্তে তাকে কাফফারা দিতে হবে। আর কাফফারা দিলে তিনি কসম করার আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন। যেমন, কেউ যদি কসম করে বলেন, আল্লাহর কসম আমি অমুক জায়গায় যাবো। কিন্তু তিনি পরে আর যেতে চাচ্ছেন না যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
তখন তিনি যদি কসম ভেঙ্গে ফেলন (ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃত) – তাহলে তিনি কসম ভাঙ্গার জন্য কাফফারা দেবেন। আর কাফফারা দেওয়ার পর না গেলেও কোনো সমস্যা নেই।
কসম ভাঙ্গার জন্য কাফফারা দেওয়ার তিনটা উপায় আছে। যার সামর্থ আছে তার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটাকে বেছে নিবেন। আর এই তিনটা না পারলে চতুর্থ আরেকটা আছে সেটা করতে হবে। কিন্তু তিনটার সামর্থ থাকলে তার মধ্য থেকে যেকোনো একটাকেই বেছে নিতে হবে।
১. দশজন মিসকীনকে খাবার দিতে হবে। খাবার এমন মানের দিতে হবে যা তার পরিবারের জন্য ব্যয় করে থাকেন। 
২. অথবা দশজন মিসকীনকে পোশাক দিতে হবে
৩. অথবা একজন দাস মুক্ত করতে হবে
৪. কারো পক্ষে যদি উপরের তিনটা কাজ করার মতো আর্থিক সামর্থ্য না থাকে তাহলে তিনদিন রোজা রাখতে হবে।
এই সম্পর্কে আল্লাহ্‌ বলেন,
“আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে, দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক। অথবা, তাদেরকে বস্ত্র প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে। যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে। এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।” (সুরা আল-মায়িদাহ, আয়াত ৮৯)।
উল্লেখ্যঃ কাফফারা টাকা দিলে হবেনা। যেটা দিয়ে কাফফারা আদায় করতে চাচ্ছেন (খাবার অথবা পোশাক) ঠিক সেটাই দিতে হবে, তার মূল্য দেওয়া জায়েজ নয়।
আর বড় কোনো বিষয় ছাড়া কসম করা উচিত না। আর কথায় কথায় কসম করে কিছু বলার অভ্যাস ছেড়ে দেওয়া উচিত।